মেট্রোপলিটন বিল্ডিং
সেই সময় ব্রিটিশদের কলকাতা শহরে আরো দুটি ডিপার্মেন্ট স্টোর ছিল। লোয়ার চৌরঙ্গী রোডে "আর্মি এন্ড নেভি স্টোর" আর একটি "হল এন্ড এন্ডারসন" নামে পার্ক স্ট্রীটে। হোয়াইওয়ে লেডলও এন্ড ডিপার্টমেন্ট স্টোরটি ক্রমে ক্রমে কলকাতার প্রধান ও উৎকৃষ্টতম স্টোরে রূপান্তরিত হয়েছিল।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার পর কলকাতা থেকে ব্রিটিশরা তাদের দেশে ফিরে যেতে শুরু করল, তখন থেকে ক্রেতার এভাবে স্টোরটিতে কেনা-বেচাও কমতে থাকলো। ধীরে ধীরে স্টোরটি বন্ধ হয়ে গেলো। তখন মেট্রোপলিটন লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি সম্পূর্ণ বাড়িটা ভাড়ায় নিলো। বাণিজ্যিক জায়গাটির নাম তারা পরিবর্তন করে রাখলো "সাচিন্দ নন্দ চেম্বার" আর বাড়িটার নাম তারা পাল্টে করলো "মেট্রোপলিটন বিল্ডিং"।
বর্তমানে বাড়িটির একতলায় বিগবাজার নামে একটি সংস্থাকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ওপরের তলাগুলোতে আবাসিক ও বাণিজ্যিক কার্যালয় এখনো রয়েছে। ১৯০৫ সালে নির্মিত ভবনটির মালিকানা এখন রয়েছে ভারতীয় জীবন বীমা নিগমের হাতে। ২০০৩ সালে ভারতীয় জীবন বীমা নিগম বাড়িটিকে সংস্কার করেছে। বাড়িটির বাইরের দেওয়াল সাদা করে দিয়েছিলো। ২০১০ সালে বিখ্যাত শিল্পী গণেশ পাইনের কথা অনুযায়ী তারা সাদা রঙের সাথে সোনালী রঙের প্রয়োগ ঘটায়। বর্তমানে সাদা ও সোনালী রঙে রঙ্গীন করা আছে। ভবনটি কলকাতার ঐতিহ্য বহন করছে। ধর্মতলার সৌন্দর্য্য বর্ধন করছে।
ছবি ও লেখার স্বত্ত : সুদীপ্ত মুখার্জী
তারিখ : ২০-০৭-২০১৯
➧ আমার এই লেখাটি ও ছবিটি যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী লেখাগুলো পেতে ব্লগটিকে ফলো করে রাখুন।
কলকাতার ময়দান অঞ্চলটি অতীতে ছিল জঙ্গল এলাকা। পরবর্তীকালে এই জঙ্গলের উত্তর অংশটিকে পরিষ্কার করে এসপ্ল্যানেড বা ধর্মতলা নাম দেওয়া হয। ধর্মতলা বা এসপ্ল্যানেড হল কলকাতার একদম কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটা বাণিজ্যিক এলাকা। শহরের খুবই ব্যস্ততম এলাকা। এই এলাকাতেই একদিকে রয়েছে শহীদ মিনার, বাস ও ট্রামের গুমটি আর একদিকে আছে বিখ্যাত মেট্রো সিনেমা হল (বর্তমানে শপিং মল) এই মেট্রো সিনেমা হালের পাশেই আছে শিল্পকলায় ও সৌন্দর্যেমোড়া একটি বৃহৎ বাড়ি, যার ওপরে তিন কোনে তিনটি গম্বুজ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এই বৃহদাকার ভবনটি জওহরলাল নেহেরু রোড ও সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী রোডের সংযোগস্থলে অবস্থিত।
বাড়িটি ব্রিটিশ আমলে তৈরী করা হয়েছিল। বর্তমান নাম "মেট্রোপলিটন বিল্ডিং" কিন্তু পূর্বে অবশ্য নাম ছিল Whiteway Laidlaw department store"হোয়াইওয়ে লেডলও এন্ড ডিপার্টমেন্ট স্টোর" (Whiteway, and Laidlaw Department Store)। হোয়াটওয়ে লেডলও এন্ড ডিপার্টমেন্ট স্টোর হলো একটি ব্রিটিশ সংস্থা। দুজন স্কটিশ ১৮৮২ সালে এই সংস্থাটির গোড়াপত্তন করেন। কলকাতাতেই তাদের প্রধান কার্যালয় ছিল। এছাড়া ভারতবর্ষের মুম্বাই, চেন্নাই, ও সিমলায় তাদের শাখা ছিল, ভারতের বাইরে লাহোর, কলম্বো, বার্মা, সাংহাই এরকম কয়েকটি জায়গাতেও তাদের শাখা ছিল। হোয়াইওয়ে লেডলও এন্ড ডিপার্টমেন্ট স্টোরের ডাকনাম ছিল "Right-away" ও "Paid-for"। সংস্থাটিতে কোনোরকম ধার-বাকি পাওয়া যেত না, তারা সম্পূর্ণ নগদে ব্যবসা করত।
১৯০৫ সালে সংস্থাটি তাদের প্রধান কার্যালয় তৈরী করে দেওয়ার জন্য ম্যাকিনটোশ এন্ড বার্ন কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। জমিটি কলকাতার ধর্মতলা অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ একটা জায়গা ছিল। সংস্থাটিও চেয়েছিলো খুবই আকর্ষণীয়ভাবে বাড়িটি তৈরী করতে, যাতে ক্রেতাদের সহজেই আকর্ষণ করা যায় । ম্যাকিনটোশ সংস্থাও খুব সুন্দরভাবে ও আকর্ষনীয়রূপ দিয়ে বাড়িটি তৈরী করে দিয়েছিল। এক একটি তলা বেশ বড় আকারের ও সিঁড়িও বেশ চাওড়া করে তৈরী করেছিল। ভিতরে মার্বেল পাথরের ও কাঠের সুন্দর কাজ করে দিয়েছিল। হোয়াইওয়ে লেডলও এন্ড ডিপার্টমেন্ট স্টোর নীচের ও প্রথম তলটিতে তাদের দোকান খোলে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা দুটো আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংস্থাকে ভাড়া দেয়। বাণিজ্যিক জায়গাটির নামকরণ করা হয়েছি "ভিক্টরিয়া চেম্বার"। এটি আবাসিক ও বিণিজ্যিক ভবন। বাড়িটি নিও ব্যারোক স্থাপত্যশৈলীতে তৈরী। ভবনটির মাথায় তিনটি গম্বুজযুক্ত মিনার আছে।, তার মধ্যে একটি ক্লক টাওয়ার। বাড়িটির জানালাগুলো খিলানযুক্ত জানালা।
সেই সময় ব্রিটিশদের কলকাতা শহরে আরো দুটি ডিপার্মেন্ট স্টোর ছিল। লোয়ার চৌরঙ্গী রোডে "আর্মি এন্ড নেভি স্টোর" আর একটি "হল এন্ড এন্ডারসন" নামে পার্ক স্ট্রীটে। হোয়াইওয়ে লেডলও এন্ড ডিপার্টমেন্ট স্টোরটি ক্রমে ক্রমে কলকাতার প্রধান ও উৎকৃষ্টতম স্টোরে রূপান্তরিত হয়েছিল।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার পর কলকাতা থেকে ব্রিটিশরা তাদের দেশে ফিরে যেতে শুরু করল, তখন থেকে ক্রেতার এভাবে স্টোরটিতে কেনা-বেচাও কমতে থাকলো। ধীরে ধীরে স্টোরটি বন্ধ হয়ে গেলো। তখন মেট্রোপলিটন লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি সম্পূর্ণ বাড়িটা ভাড়ায় নিলো। বাণিজ্যিক জায়গাটির নাম তারা পরিবর্তন করে রাখলো "সাচিন্দ নন্দ চেম্বার" আর বাড়িটার নাম তারা পাল্টে করলো "মেট্রোপলিটন বিল্ডিং"।
বর্তমানে বাড়িটির একতলায় বিগবাজার নামে একটি সংস্থাকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ওপরের তলাগুলোতে আবাসিক ও বাণিজ্যিক কার্যালয় এখনো রয়েছে। ১৯০৫ সালে নির্মিত ভবনটির মালিকানা এখন রয়েছে ভারতীয় জীবন বীমা নিগমের হাতে। ২০০৩ সালে ভারতীয় জীবন বীমা নিগম বাড়িটিকে সংস্কার করেছে। বাড়িটির বাইরের দেওয়াল সাদা করে দিয়েছিলো। ২০১০ সালে বিখ্যাত শিল্পী গণেশ পাইনের কথা অনুযায়ী তারা সাদা রঙের সাথে সোনালী রঙের প্রয়োগ ঘটায়। বর্তমানে সাদা ও সোনালী রঙে রঙ্গীন করা আছে। ভবনটি কলকাতার ঐতিহ্য বহন করছে। ধর্মতলার সৌন্দর্য্য বর্ধন করছে।
ছবি ও লেখার স্বত্ত : সুদীপ্ত মুখার্জী
তারিখ : ২০-০৭-২০১৯
যোগাযোগ : ৯৮৩০৪২০৭৫০
➧ আমার এই লেখাটি ও ছবিটি যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী লেখাগুলো পেতে ব্লগটিকে ফলো করে রাখুন।
No comments:
Post a Comment