Monday, November 8, 2021

কালীপুজায় চেতলা অভিযান >P

কালীপুজায় চেতলা অভিযান 


- সুদীপ্ত মুখার্জী 



দক্ষিণ কলকাতার আদি গঙ্গার দুধারে দুটি অঞ্চল রয়েছে।  পূর্বধারে রয়েছে কালীঘাট  আর পশ্চিম ধারে রয়েছে চেতলা নামক একটা জনপদ। কলকাতার অন্য অংশের মতো চেতলা অঞ্চলটিও বেশ ঘন বসতিপূর্ণ।  

কালিপূজায় মহানগরীর দুটো অঞ্চল বরাবরই একে অপরকে টেক্কা দিতো। অঞ্চল দুটি হল মধ্য কলকাতার আমহার্টস স্ট্রীট ও দক্ষিণ কলকাতার চেতলা। আমহার্টস স্ট্রিটে পরপর বেশ কয়েকটা বড় বড় পূজা হয়ে থাকে। বড় মণ্ডপ, বড় প্রতিমা এখানকার বৈশিষ্ট্য। এখানকার পূজায় লাইটিংয়ের খেলাও বিশেষত্ব। এখানে কোনো দিন কোনো থিম দেখা যায় না। সাবেকি প্রতিমায় দেবীর আরাধনা করা হয়। অঞ্চলের পূজাগুলির মধ্যে ফাটা কেষ্টর পূজা ও সৌমেন মিত্রের পূজা খুবই বিখ্যাত। এককালে এখানে জনসমুদ্র দেখা যেত।
 
চেতলার পূজা মানেই বর্ণময়। চেতলায় বরাবরই দেখা যায় দেবী কালীর ভিন্ন ভিন্ন রূপ। এখানে শুধু শাস্ত্রমতে বর্ণিত রূপ নয়, এই অঞ্চলটিতে বাইরে থেকে নানা রকম রূপের দেবীকে  আমদানি করা হয়। এখানে কোনো পূজায় সেরকম বড় প্যান্ডেল বা বড় প্রতিমা সাধারণত দেখা যায় না।  লাইটের খেলাও খুব একটা দেখা যায় না।  এখানে কোথাও দশমহাবিদ্যা, কোথাও চামুন্ডা কালী আবার কোথাও দেখা যায় হাজার হাত কালীর। এই বৈচিত্রই চেতলা অঞ্চলের কালীপূজাকে দর্শনীয় করে তুলেছে। এখানেও এককালে জনসমুদ্র দেখা যেত। শুধু চেতলা অঞ্চলটি ঘুরলেই দেবীর সব রকমের রূপ দর্শন হয়ে যায়। 

আজ কালীপূজার দিন। এই দিন সকালে আমার মায়ের ভিন্ন ভিন্ন রূপ দর্শনের উদ্দেশ্যে চেতলা অভিযান।  এখানে আমি আপনাদের দেখার জন্য মায়ের বিভিন্ন রূপের ছবি দেবো।  


দশ মুন্ড কালী 




রাবনের মতো দশ মুন্ডের কালী প্রতিমায় এখানে পূজা হয়। বলা হয় দশমুণ্ড কালী। দেবী অষ্টভুজা। উচ্চতায় প্রায় পনেরো ফুট। মহাদেবের উপর দেবী দন্ডায়মান। এই পূজাটি দীর্ঘ ৮০ বছর ধরে করা হচ্ছে। পূজাটি পরিচালনা করে চেতলা রূপান্তর ক্লাব। পূজাটি চেতলার শংকর ঘোষ রোডের সি.আই. টি পার্কে করা হয়।  এখানে তান্ত্রিক মতে পূজা করা হয়। দেবীকে খিচুড়ি, পাঁচরকম ভাজা, পায়েস, বিভিন্ন ফল ও মিষ্টি ভোগ হিসেবে নিবেদন করা  হযে থাকে। আখ, চালকুমড়া, শশা ও কলা বলি দেওয়া হয়। 


 শ্বেত কালী 




দেবী এখানে শ্বেত শুভ্র অর্থাৎ দেবীর গাত্রবর্ণ শ্বেত। পূজাটি পরিচালনা করে আলিপুর এ.বি.এস. স্পোর্টিং ক্লাব।  এবছর এখানে ৪৭ তম বর্ষের পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেবীমূর্তি মাহেশ্বরী রুপি। দেবী চতুর্ভূজা। দেবীর এক হাতে রয়েছে ত্রিশূল, এক হাতে ডুগডুগি,  এক হাতে চাঁদমালা, ও অন্য হাতে থাকে মাটির নরমুণ্ড। দেবীর বিশেষত্ব হলো দেবীর পাদদেশে শিয়ালের বদলে থাকে শ্বেত ষাঁড়।  খিচুড়ি, লুচি, তরকারি, পাঁচরকম ভাজা, বিভিন্ন ফল ও মিষ্টি ভোগ হিসেবে মাকে নিবেদন করা হয়। এখানে কোনো প্রকার আমিষ ভোগ দেওয়ার প্রথা নেই।  


সিংহবাহিনী কালী 



দেবী সিংহবাহিনী কালীকে পূজা করে থাকে আলিপুর শীতল স্মৃতি সংঘ। এবছর তাদের পূজাটি ৫৩তম বর্ষে পদার্প করলো।  দেবীকে পোলাও, খিচুড়ি, পাঁচরকম ভাজা, মাছ, মাংস, চাটনি, পায়েস, ফল মিষ্টি ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়।  এখানে বলি দেওয়ার কোন নিয়ম নেই।  এখানকার মূর্তিটি রাজপুরের  বিপদতারিনী মায়ের আদলে তৈরী করা হয়।  প্রতিমাটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুটের মত। দেবী সিংহের উপর দন্ডায়মান।  দেবীর পাশে ত্রিশূল হাতে মহাদেব বসে রয়েছে।


শিব কালী 




শিবকালী হলেন দেবাদিদেব মহাদেব ও দেবী কালীর সম্মিলিত রূপ। শিবকালী পূজাটি পরিচালনা করে চেতলা বালক সংঘ। পূজাটি এবছর ৪১তম বর্ষে পদার্পন করলো। এখানে দেবীর অর্ধেক অংশ দেবাদিদেব মহাদেব আর বাকি অর্ধেক অংশে দেবী কালী। দেবী এখানে পদ্মের উপর দন্ডায়মান। দেবীর নীচে বাহন হিসেবে শেয়ালকে দেখা যাচ্ছে। দেবী চতুর্ভূজা। দেবীর এক হাতে থাকে ত্রিশূল, এক হাতে খাঁড়া, এক হাতে চাঁদমালা, আর এক হাতে থাকে নরমুণ্ড। মাকে এখানে খিচুড়ি, পায়েস, আলুরদম, ফল ও মিষ্টি ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়। এখানে কোনোরূপ বলি দেওয়া হয়না।  কোনো এক ভক্তের আঙ্গুল কেটে সামান্য রক্ত দেবীপূজায় মাকে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। 

চামুন্ডা কালী 




আমরা জানি দশমহাবিদ্যার প্রথম ও আদি রূপ হল কালী। রামায়ণে আমরা দেখেছি বশিষ্ঠ মুণি ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেন দক্ষিণাকালী রুপী কালীকে আরাধনা করে।  আদ্যাশক্তি মহামায়ার আটটি রূপ - দক্ষিণাকালী, সিদ্ধকালী, কৃষ্ণকালী, মহাকালী, গুহ্যকালী, ভদ্রকালী, শ্মশানকালী এবং চামুণ্ডাকালী।  এখানে দেবী কোরালবদনা, মুক্তকেশী, চতুর্ভূজা, নরমুণ্ডমালা বিভূষিতা। চেতলা দুর্গাপুর  সেতুর পাশে রয়েছে আলিপুর আরাধনা সমিতি। এই সমিতির তত্ত্ববধানে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় চামুন্ডা কালীর পূজা। ষোলো ফুট উচ্চতার দেবী চামুন্ডার পাশে থাকে দশ ফুট উচ্চতার শিব ঠাকুর। দেবীর দুপাশে থাকে ভয়াল চেহারার ডাকিনি-যোগিনী ও কঙ্কাল। মণ্ডপে লোহার ট্রলিতে দেবীমূর্তি বিরাজিত। বিসর্জনের সময় এই ট্রলিকে ঠেলে বাবুঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। দেবী বিসর্জনে পর ট্রলিটিকে ফেরত নিয়ে আসা হয় এবং সেটাকে যত্ন সহকারে রেখে দেওয়া হয়। এই ট্রলিটিকে সারাবছর দেবীর কাঠামো হিসেবে পূজা করা হয়। কাঠামোটিকেই দেবী বলে গণ্য করা হয়। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার কাঠামোকে পূজা করা হয়।  এছাড়া প্রত্যেক অমাবস্যায় কাঠামোকে ভোগ দেওয়া হয়। এবছর ৭৪তম বর্ষের পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খিচুড়ি, পায়েস, পাঁচরকম ভাজা, আলুরদম, পোলাও, সুজি, পাঁচরকম মিষ্টি, চাটনি দেবীকে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়। এখানে কোনো প্রকার আমিষ ভোগ  দেবীকে নিবেদন করা হয় না।  বলি দেওয়া হয় না।  বৈষ্ণব  মতে পূজা করা হয়। পুজোর দেবীর পূজার সময় দেবীকে মানব দেহের রক্ত ও কারণ সুধা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।  রক্ত ছাড়া চামুন্ডা কালির পূজা হয় না। 


দুর্গাকালী 




দুর্গাকালী হলেন দেবী দূর্গা ও দেবী কালীর  সম্মিলিত রূপ। পূজাটি পরিচালনা করে চেতলা সৎ সংঘ  ক্লাব। এবছর ৩০তম পূজাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই ক্লাবটিতে পূর্বে শ্যামা মায়ের, তারপর অজন্তা কালীর  আরাধনা করা হত।  এখন দুর্গাকালীর আরাধনা করা হয়। এখানকার ভোগ সম্পূর্ণ নিরামিষ।  খিচুড়ি, পাঁচরকম ভাজা, তরকারি, আলুরদম, শাকের ঘন্ট, পায়েস, ফল-মিষ্টি দেওয়া হয়।  চালকুমড়া, আখ, শশা, কলা, বাতাবি লেবু বলি দেওয়া হয়।  প্রথমে ১০৮টি পদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করা হয়, তারপর দেবী কালীর পূজা করা হয়।  
 

হাজার হাত কালী 



হাজার হাত কালীর পূজাটি পরিচালনা করে চেতলা ফিজিক্যাল কালচার এসোসিয়েশন। হাওড়ার শিবপুরের হাজার হাত কালীর অনুকরণে এখানকার মূর্তিটি রূপায়িত হয়। ক্লাবের এক সদস্য জানালেন  আমরা সব সময় মানুষের দুঃখ কষ্টে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। আমরা  আমাদের সদস্যদের হাজার হাজার হাত মানব সেবায় নিয়োজিত করতে থাকি তাই আমাদের এই ধরণের থিম। হাজার হাত নিয়ে দেবীর শান্ত রূপ। এবছর পূজাটি ৮৩তম বর্ষে পদার্পন করলো। দেবীকে খিচুড়ি, পোলাও,  লুচি, পাঁচরকম ভাজা, হালুয়া, লাবড়া, চাটনি, পায়েস ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়।  আখ, চালকুমড়া, বলি দেওয়া হয়। এখানে পরম্পরা বজায় রেখে  পূজা করা হয়।  ভোগ বা দেবীর অন্য কাজে  পুরুষরাই সব কাজ করে থাকে কোনো মহিলাকে এইসব কাজে অংশ নিতে দেওয়া হয় না।  মায়ের এক হাতে ত্রিশূল আর এক হাতে খাঁড়া থাকে। দেবীর গাত্রবর্ণ সবুজ। দেবী এখানে শিবের উপর দন্ডায়মান নয়, বাঘ চাল পরিহিত মহাদেবাদিদেব মহাদেব দেবীর পাশে বসে রয়েছে। এছাড়া এখানে দেবীর বাহন হিসেবে একটি সিংহকে দেখা যায়।   


লক্ষ্মী কালী  



লক্ষ্মীকালী হলেন দেবী লক্ষ্মী ও দেবী কালীর সম্মিলিত রূপ। লক্ষ্মীকালী পূজাটি পরিচালনা করে শাস্ত্রী রয়েল ক্লাব। এবছর পূজাটি ২৩তম বর্ষে পদার্পন করলো। এখানে দেবীকে ভোগ হিসেবে খিচুড়ি, আলুরদম, পায়েস, নানারকম ফল, বিভিন্ন মিষ্টি দেওয়া হয়।  সম্পূর্ণ নিরামিষ ভোগ মাকে  নিবেদন করা হয়।  এখানে কোনোরূপ বলি দেওয়া হয় না।  দেবী পদ্মের উপর দন্ডায়মান। দেবীর নীচে একটি শঙ্খের উপর দেবী লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা থাকে। দেবীর পাশে বাঘচাল পরিহিত দেবাদিদেব মহাদেব থাকেন। দেবী চতুর্ভূজা। 


চন্ড ঘন্টা কালী 



চেতলা হাট রোডের চন্ড ঘন্টা কালী পূজাটি পরিচালনা করে গীতাঞ্জলি স্পোর্টিং ক্লাব। এবছর তাদের পূজাটি ৪১তম বর্ষে পদার্পন করলো। দেবী চতুর্ভূজা। দেবীর মাথার দুপাশে দুটি করে মোট চারটি নরমুণ্ড রয়েছে। দেবী বাঘছাল পরিহিত অবস্থায়  মহাদেবের উপর দন্ডায়মান। এছাড়া দেবীর পাশে আর একটি মহাদেবের মূর্তি বিরাজিত। 


কৃষ্ণ কালী 



কৃষ্ণকালী হলেন বিষ্ণুর অষ্টম অবতার শ্রীকৃষ্ণ ও দেবী কালীর সম্মিলিত রূপ। চেতলা হাট রোডে অবস্থিত চেতলা সংঘ ক্লাবটি ১৯৬৬ সালে স্থাপিত হয়। এই ক্লাবটি প্রতিবছর নিয়ম করে এখানে কৃষ্ণ কালীর আরাধনা করে থাকে। দেবী এখানে চতুর্ভূজা।  দেবীর এক হাতে থাকে খাঁড়া, এক হাতে চাঁদমালা আর বাকি দুই হাতে দেখা যায় বাঁশি।  দেবীর পাশে দেবী লক্ষ্মী করজোড় অবস্থায় দন্ডায়মান। দেবীকে সম্পূর্ণ নিরামিষ ভোগ নিবেদন করা হয়। এখানে কোনো প্রকার আমিষ ভোগ দেওয়ার নিয়ম নেই।  এখানে চালকুমড়ো, আগ  বলি দেওয়া হয়। 

আদ্যামা 


 
দেবী আদ্যমা পূজাটি পরিচালনা করে চেতলা বজরঙ বালক সমিতি। এবার পূজাটি ৫০ বছরে পড়ল। দেবীর উপরে রয়েছে রাধাকৃষ্ণ। দেবীর নীচে রয়েছে রামপ্রসাদ। দেবীকে সম্পূর্ণ নিরামিষ ভোগ নিবেদন করা হয়।  এখানে চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয়।  


দেবী কিরীটেশ্বরী 



কিরীটেশ্বর কালী পূজাটি পরিচালন করে চেতলা প্রণব সংঘ।  এবছর পূজাটি ২০তম বর্ষে পদার্পন করলো। দেবীকে ভোগ হিসেবে খিচুড়ি, পাঁচরকম ভাজা, লাবড়ার তরকারি, পায়েস ইত্যাদি দেওয়া হয়।  চালকুমড়া, আখ, আমাদা বলি দেওয়া হয়। এই ক্লাবটি পূর্বে শ্যামা পূজা করতো। তারপর ৫১ পিঠের দেবী কিরীটেশ্বরকে দেখে ও মুর্শিদাবাদের ৫১ পীঠ কিরীটেশ্বরের প্রধান পুরোহিত শ্রী রক্ষাকর চক্রবর্তী মহাশয়ের আদেশ অনুযায়ী এখানকার শ্যামা পূজার পরিবর্তে দেবী কিরীটেশ্বররীর আরাধনা শুরু হয়। 

ছিন্নমস্তা



 ছিন্নমস্তা রুপী দেবী কালীর  আরাধনা করে থাকে চেতলা অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য পূজা কমিটি।  পূজাটি পরিচালনা করে চেতলা ৮৬ পল্লী ক্লাব। এখানকার প্রতিমা প্রায় পনেরো ফুট উচ্চতার। প্রতিমার গাত্রবর্ণ টকটকে  লাল এবং মুন্ডহীন। নিজের কাটা মুন্ড নিজের হাতেই ধরা।  দেবীর ডান হাতে ধরা থাকে খাঁড়া। গলা থেকে ছিটকে আসা তিনটে রক্তের ধারা দেবীর কাটা মুন্ড  ও ডাকিনি  যোগিনী পান করে। মা দাঁড়িয়ে থাকেন কাম রতি  অর্থাৎ চিৎ ও শুয়ে থাকার নারী পুরুষ মূর্তির উপর।মূর্তি দুটি পদ্মের উপর থাকে।  সুদীর্ঘকাল ধরে এখানে মায়ের এই রূপের পূজা করা হয়। বহুকাল ধরে এখানে পূজাটি করার অন্যতম কারণ এখানকার ক্লাবের সদস্য ও পল্লীবাসীদের বিশ্বাস। ছিন্নমস্তা রুপী দেবীর পূজাটি এখানে শুরু হওয়ার পর অনেক ক্লাব সদস্যের চাকরি হয়েছে আবার কারো ব্যবসায় শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। এছাড়া ক্লাব সদস্য ও পল্লীবাসীদের অনেকের অনেক রকম উপকার হয়েছে বলে শোনা যায়।  সাধারণত ছিন্নমস্তা হলেন দশমহাবিদ্যার এক রূপ। দেবীকে এই রূপে পূজা করতে হলে যেমন বহুরকম নিয়ম পালন করতে হয় তেমন বহুরকম বিধিনিষেধও রয়েছে। পূজার সময় বাইরের কারোকে মণ্ডপে ঢুকতে দেওয়া হয় না।  উপোস করা  থাকলে তবে তাকে পূজার সময় মণ্ডপে ঢুকতে দেওয়া হয়। তান্ত্রিক ছাড়া সাধারণ কোনো পুরোহিত এই পূজা করতে পারেন না।  প্রতি বছর তারাপীঠ থেকে কোনো তান্ত্রিক এসে এখানকার পূজাটি করে থাকে। এই পূজায় পাঁঠা বলির নিয়ম রয়েছে। পাঁঠা বলির সাথে চালকুমড়া বলি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। দেবীকে ভোগ হিসেবে খিচুড়ি, পোলাও, পাঁচরকম ভাজা, পায়েস, লুচি, মালপোয়া, হালুয়া, মাছ ভাজা, মাংস দেওয়া হয়। 


জহুরা কালী 





চেতলা ব্রীজের ঠিক পাশে দেবী জহুরার আরাধনা করা হয়ে থাকে। পূজাটি পরিচালন করে চেতলা ইয়ং ফ্রেন্ডস। দেবী কালির অন্যান্য রূপে সাথে এই রূপে  নেই। এখানে দেবীরূপ বীভৎস। রক্তবর্ণ মুখ। এবছর পূজাটি ৪৮তম বর্ষে পদার্পন করলো। দেবীকে খিচুড়ি, পায়েস, পাঁচরকম ভাজা, লাবড়ার তরকারি, চাটনি ইত্যাদি দেওয়া হয়।  এখানে কোনো রকম আমিষ ভোগ দেওয়ার নিয়ম নেই।  বলি দেওয়া হয় চালকুমড়োকে। 


লেখা ও ছবির স্বত্ব সম্পূর্ণ লেখকের।

তারিখ :০৯-১১-২০২১

যোগাযোগ : ৯৮৩০৪২০৭৫০





 আমার এই লেখাটি ও ছবিটি  যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান      মতামত কমেন্টের  মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী লেখাগুলো  পেতে  ব্লগটিকে ফলো করে রাখুন। 


No comments: