শরীরের যে অংশ নিয়ে মানুষের সবচেয়ে দুর্বলতা রয়েছে, তা হল তার কেশবিন্যাস। এটি কমতে থাকলে মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। কেশ বা চুলকে ভালোবাসেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই নগন্য। ছেলেদের কেউ বড়, কেউ ছোট আকারে চুল রাখতে পছন্দ করে আবার বর্তমানে মুন্ডিত মস্তক লক্ষ্য করা যায়। মেয়েরা কেউ কেউ লম্বা চুলে বেণী বাঁধতে যেমন পছন্দ করে তেমন কেউ আবার বব কাট চুল রাখতে পছন্দ করে থাকে। বর্তমানে আবার চুলের রঙ পরিবর্তন করে নানান রঙে রঙিন করার চল হয়েছে। সৌন্দর্য ও মর্যাদার বহিঃ প্রকাশই হলো মানুষের কেশবিন্যাস। আমাদের এই কেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নাপিত বা ক্ষৌরকারদের প্রয়োজন হয়। তাদের পরামানিক ও কেশবিন্যাসকারীও বলা হয়ে থাকে।
নাপিত বা ক্ষৌরকারদের পেশা একটি বৈধ পেশা। তারা সমাজকর্মী হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। হিন্দু ও মুসলমান উভয় সমাজে এই সম্প্রদায়ের লোকদের একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানস্বরূপ গণ্য করা হয়। জীবনের প্রতিস্তরে এই পেশার লোক ছাড়া হিন্দুদের চলে না। তা সে দৈনন্দিন জীবনের চুল বা দাঁড়ি কাটা হোক বা জন্ম ও বিবাহ উৎসব অনুষ্ঠানে হোক। কিছু ধর্মীয় আচার-আচরণ তাদের দ্বারা পালন করতে হয়। হিন্দু ব্রাহ্মণ সন্তানদের উপনয়নের সময় ও পিতা-মাতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় মস্তক মুন্ডন করার জন্য এদের প্রয়োজন হয়। মানুষকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে তাদের সংসার যাপন চলে। পূর্বে এই ধরণের সেবা প্রদানের জন্য তারা অর্থের বদলে দ্রব্যসামগ্রী উপহারস্বরূপ পেত।
নাপিতরা নমঃ শূদ্র জাতিগোষ্ঠীর একটি অংশ। এরা নমঃশূদ্ররা ছিল সমাজের সবচেয়ে নীচু প্রজাতির নিম্ন সম্প্রদায়ের মানুষ হলেও এরা অস্পৃশ্য নয়। মানুষের সেবামূলক কাজগুলো করাই এদের প্রধান দায়িত্ব। আগে যেখানে শীল গোত্রের নমঃশূদ্ররাই এই কাজটি করতো। সময়ের পরিবর্তনে ও বাঁচার তাগিদে অন্য গোত্রের হিন্দুরাও এই পেশায় সামিল হয়েছে।
নাপিতদের সাধারণত একটি দোকান থাকে, সেই দোকানকে বলা হয় "সেলুন"। এই দোকানে বসেই তারা দৈনন্দিন পেশার কাজ করে। যেসব নাপিতের সেলুন খোলার ক্ষমতা নেই তারা রাস্তার ধরে ইটের ওপর বসে কাজ চালিয়ে নেয়। বাঙালিরা রসিকতা করে এই গুলোকে "ইটালিযান সেলুন" বলে থাকে। আগে বাড়ির বড়োরা এই ইতালিয়ান সেলুনে বসে চুল-দাঁড়ি কেটে রাস্তার কোলে স্নান সেরে তবে বাড়িতে ঢুকতো। আজকাল এই ধরনের ইতালিয়ান সেলুন খুব কম দেখা যায়। পাড়ার সেলুনগুলোও অনেক কমে গেছে। তার বদলে এসে গেছে ঝা-চকচকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সেলুন। যার গাল ভরা নাম দেওয়া হয়েছে ইংরেজদের থেকে ধার করে বিউটি পার্লার। বর্তমানে শহরের অলিতে-গলিতে ছড়িয়ে পড়েছে পুরুষদের ও মহিলাদের জন্য বিউটি পার্লার। কোনটা শুধুমাত্র মহিলাদের আবার কোনটা শুধুমাত্র পুরুষদের। তবে কিছু পুরুষ-মহিলাদের পার্লার রয়েছে, যেগুলোকে বলা হয় ইউনিসেক্স পার্লার। ভিতরে ঢোকার জন্য পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা দরজা রয়েছে। সেখানে সাধারণত চুল কাটা, চুলে রঙ করা, কনেকে সাজানো ইত্যাদি কাজ করা হয়ে থাকে।
ছবি ও লেখার সত্ব : সুদীপ্ত মুখার্জী
তারিখ : ৩০-০১-২০২০
যোগাযোগ : ৯৮৩০৪২০৭৫০
➧ আমার এই লেখাটি ও ছবিটি যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী লেখাগুলো পেতে ব্লগটিকে ফলো করে রাখুন।
নাপিত বা ক্ষৌরকারদের পেশা একটি বৈধ পেশা। তারা সমাজকর্মী হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। হিন্দু ও মুসলমান উভয় সমাজে এই সম্প্রদায়ের লোকদের একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানস্বরূপ গণ্য করা হয়। জীবনের প্রতিস্তরে এই পেশার লোক ছাড়া হিন্দুদের চলে না। তা সে দৈনন্দিন জীবনের চুল বা দাঁড়ি কাটা হোক বা জন্ম ও বিবাহ উৎসব অনুষ্ঠানে হোক। কিছু ধর্মীয় আচার-আচরণ তাদের দ্বারা পালন করতে হয়। হিন্দু ব্রাহ্মণ সন্তানদের উপনয়নের সময় ও পিতা-মাতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় মস্তক মুন্ডন করার জন্য এদের প্রয়োজন হয়। মানুষকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে তাদের সংসার যাপন চলে। পূর্বে এই ধরণের সেবা প্রদানের জন্য তারা অর্থের বদলে দ্রব্যসামগ্রী উপহারস্বরূপ পেত।
নাপিতরা নমঃ শূদ্র জাতিগোষ্ঠীর একটি অংশ। এরা নমঃশূদ্ররা ছিল সমাজের সবচেয়ে নীচু প্রজাতির নিম্ন সম্প্রদায়ের মানুষ হলেও এরা অস্পৃশ্য নয়। মানুষের সেবামূলক কাজগুলো করাই এদের প্রধান দায়িত্ব। আগে যেখানে শীল গোত্রের নমঃশূদ্ররাই এই কাজটি করতো। সময়ের পরিবর্তনে ও বাঁচার তাগিদে অন্য গোত্রের হিন্দুরাও এই পেশায় সামিল হয়েছে।
নাপিতদের সাধারণত একটি দোকান থাকে, সেই দোকানকে বলা হয় "সেলুন"। এই দোকানে বসেই তারা দৈনন্দিন পেশার কাজ করে। যেসব নাপিতের সেলুন খোলার ক্ষমতা নেই তারা রাস্তার ধরে ইটের ওপর বসে কাজ চালিয়ে নেয়। বাঙালিরা রসিকতা করে এই গুলোকে "ইটালিযান সেলুন" বলে থাকে। আগে বাড়ির বড়োরা এই ইতালিয়ান সেলুনে বসে চুল-দাঁড়ি কেটে রাস্তার কোলে স্নান সেরে তবে বাড়িতে ঢুকতো। আজকাল এই ধরনের ইতালিয়ান সেলুন খুব কম দেখা যায়। পাড়ার সেলুনগুলোও অনেক কমে গেছে। তার বদলে এসে গেছে ঝা-চকচকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সেলুন। যার গাল ভরা নাম দেওয়া হয়েছে ইংরেজদের থেকে ধার করে বিউটি পার্লার। বর্তমানে শহরের অলিতে-গলিতে ছড়িয়ে পড়েছে পুরুষদের ও মহিলাদের জন্য বিউটি পার্লার। কোনটা শুধুমাত্র মহিলাদের আবার কোনটা শুধুমাত্র পুরুষদের। তবে কিছু পুরুষ-মহিলাদের পার্লার রয়েছে, যেগুলোকে বলা হয় ইউনিসেক্স পার্লার। ভিতরে ঢোকার জন্য পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা দরজা রয়েছে। সেখানে সাধারণত চুল কাটা, চুলে রঙ করা, কনেকে সাজানো ইত্যাদি কাজ করা হয়ে থাকে।
ছবি ও লেখার সত্ব : সুদীপ্ত মুখার্জী
তারিখ : ৩০-০১-২০২০
যোগাযোগ : ৯৮৩০৪২০৭৫০
➧ আমার এই লেখাটি ও ছবিটি যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী লেখাগুলো পেতে ব্লগটিকে ফলো করে রাখুন।