বাবা জটিলেশ্বর মন্দির
ছবি ও লেখার সত্ব : সুদীপ্ত মুখার্জী
তারিখ : ১৬-০২-২০২০
যোগাযোগ : ৯৮৩০৪২০৭৫০
➧ আমার এই লেখাটি ও ছবিটি যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী লেখাগুলো পেতে ব্লগটিকে ফলো করে রাখুন।
বাবা জটিলেশ্বর মন্দির |
হুগলী জেলা বাংলার পুরাকীর্তির ও স্থাপত্যের ইতিহাসে বরাবরই উজ্জ্বল হয়ে আছে। ব্যান্ডেল গির্জা, ফুর ফূরাহ শরিফ, ইমামবাড়া, শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির, ষাঁড়েশ্বরতলা মন্দির, হংসেশ্বরী মন্দির, বৃন্দাবন জিউ মন্দির, নৃত্যগোপাল স্মৃতি মন্দির, আঁটপুর মঠ, ওয়াচ টাওয়ার, জাফরগঞ্জ কবরস্থান, জয় কৃষ্ণ লাইব্রেরী, সেন্ট ওলাফের গির্জা, চার্চ অফ সেক্রে কোয়ের ডি জেসু, বৌদ্ধ মন্দির, লাইট হাউস টম্ব, চন্দননগর মিউজিয়াম, চন্দননগর গির্জা, নন্দদুলাল মন্দির ইত্যাদি জেলা পর্যটনের অন্যতম গন্তব্য স্থান।
হুগলী জেলার চুঁচুড়া শহর ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী শহর। শহরটি জেলার সদর শহর হিসেবে পরিচিত। হুগলী নদীর তীরে শহরটি গড়ে উঠেছে। ওলন্দাজদের হাত ধরেই শহরটির গোড়াপত্তন হয়। মুঘল কর্তৃক পর্তুগীজদের বিতরনের পর ১৬৩২ সালে ওলন্দাজরা হুগলীতে আসে। তারা ১৬৩৮, ১৬৫০, এবং ১৬৬২ সালে মুঘল সম্রাটের নিকট হতে চুঁচুড়াতে ব্যবসা করার ছাড়পত্র বা হুকুমনামা লাভ করে। ওলন্দাজ নৌ-সেনাপতি ভ্যান দাড় ব্র্যাক ১৫৫৩ সালে চুঁচুড়ায় কুঠি স্থাপন করেন। তিনি পরবর্তী প্রায় ৫৭ বছর এখানে বাণিজ্য করেন এবং তিনিই চুঁচুড়া শহরের পত্তন করেন। ওলন্দাজদের ক্রমবর্ধমান ব্যবসা বৃদ্ধি ও ক্ষমতা বৃদ্ধি তৎকালীন ইংরেজ সকারের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৭৫৯ সালে বিদেরার যুদ্ধে ইংরেজরা ওলন্দাজদের পরাজিত করার পর জেলাটি ইংরেজদের অধীনে চলে আসে। শহরের আনাচে কানাচে ইতিহাস ছড়িয়ে রয়েছে। এক সময় ওলন্দাজদের বন্দর ছিল এই শহরেই।
চুঁচুড়ার কোদালিয়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলা অঞ্চলে বাবা জটিলেশ্বর মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরটি খুবই ঐতিহ্যহবাহী ও জাগ্রত এক মন্দির। শোনা কথা, সরস্বতী নদী থেকে মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত বাবা জটিলেশ্বরকে পাওয়া গিয়েছিল। শিব এখানে জটিলেশ্বর রূপে বিরাজ করছেন। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে মন্দির ও মন্দির সংলগ্ন অঞ্চলে প্রতি বছর বাৎসরিক উৎসব হয়। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে একটি বিরাট রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। অসময়ের এই রথযাত্রা ও তাকে কেন্দ্র করে বিশাল মেলাও বসে। এই মেলায় যাত্রা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই দিনটিতে বিশেষ পুজোও হয়। চিরাচরিত প্রথা মেনে রথে বাবা জটিলেশ্বরকে নিয়ে শহরে প্রমোদ ভ্রমণ করানো হয়। বহু লোকের সমাগম হয় সেই দিনটিতে। লোকের বিশ্বাস বাবার কাছে মানত করলে জটিল রোগ থেকে মুক্তি মেলে। সেই কারনে বাবার নাম জটিলেশ্বর হয়েছে। বাবার আবির্ভাব ও মন্দির স্থাপনার সন সম্বন্ধে স্থানীয় লোকেরা কিছু জানাতে পারলেন না। কেউ বললেন শত বৎসর উত্তীর্ণ আবার কারো কারো ধারণা ২০০ বছর পেরিয়ে গেছে। তবে একজন বয়স্ক জানালেন যে, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে গড়ে তোলা যাত্রার দল প্রায় ১১২-১৩ বছর ধরে মেলার সময় যাত্রা করে চলেছে। সেই হিসেব ধরলে এখানকার মন্দির শত বৎসর অতিক্রান্ত। এই অকাল মেলাটি চলে আরো বেশ কয়েকদিন ধরে।
ছবি ও লেখার সত্ব : সুদীপ্ত মুখার্জী
তারিখ : ১৬-০২-২০২০
যোগাযোগ : ৯৮৩০৪২০৭৫০
➧ আমার এই লেখাটি ও ছবিটি যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী লেখাগুলো পেতে ব্লগটিকে ফলো করে রাখুন।